গাজায় যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইলি হামলায় ৬৭ শিশু নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মধ্যেই অন্তত ৬৭ শিশুকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইল—এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। 

শনিবার (২২ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।

শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস জানান, নিহতদের মধ্যে একটি নবজাতক মেয়েশিশুও রয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে গত বৃহস্পতিবার এক বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় তাকে হত্যা করা হয়। এর আগের দিনও দখলদার বাহিনীর একাধিক হামলায় সাত শিশুর মৃত্যু ঘটে।

পিরেস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এসব ঘটছে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মধ্যেই। চলমান এই পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক।” তিনি আরও বলেন, এই নিহত শিশুরা কেবল সংখ্যা নয়—প্রতিটি ছিল একটি পরিবার, একটি স্বপ্ন, একটি জীবন; যা নিরন্তর সহিংসতায় মুহূর্তেই নিভে গেছে।

ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের সবচেয়ে বড় শিকার শিশুরাই। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার শিশু নিহত বা আহত হয়েছে।

অন্যদিকে, মানবাধিকার সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২০২৪ সালে প্রতি মাসে গড়ে ৪৭৫ জন ফিলিস্তিনি শিশু পঙ্গুত্ব বরণ করছে। অনেকে মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে, কারও শরীরজুড়ে গভীর দগ্ধ ক্ষত। আধুনিক ইতিহাসে গাজা এখন সবচেয়ে বেশি শিশুর অঙ্গচ্ছেদ হওয়া অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।

পিরেস আরও জানান, বহু শিশু খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে। বন্যায় প্লাবিত অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই না পেয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।

তিনি বলেন, “গাজার শিশুদের জন্য সত্য একটাই—তাদের জন্য কোথাও নিরাপদ জায়গা নেই। তাদের এই যন্ত্রণাকে স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করা মানবিকতার পরিপন্থী।”

এ অবস্থায় ধ্বংসস্তূপে ঘেরা তাঁবুতে থাকা লক্ষাধিক শিশুর জন্য শীতকাল আরও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।