শুক্রবার ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তান-আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত: তুরস্ক

পাকিস্তান-আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত: তুরস্ক
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। তুরস্কে টানা পাঁচ দিনের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত বিভিন্ন শর্ত নিয়ে আগামী ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকের আগ পর্যন্ত কোনো সংঘাত যেন না ঘটে— এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে দুই দেশের সরকার।

দুই দেশের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা ডুরান্ড লাইন নামে পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক ক্রমশ অবনতি হতে থাকে।

এই উত্তেজনার অন্যতম কারণ পাকিস্তানের তালেবানপন্থি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। কয়েক বছর আগে গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও, তারা এখনো সক্রিয়ভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ টিটিপির অন্যতম ঘাঁটি, যা আফগানিস্তানের সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত।

পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে আফগান তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিচ্ছে, যদিও আফগানিস্তান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। ওই হামলায় টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ, দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদ সহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য নিহত হন।

এর পরপরই ১১ অক্টোবর আফগান সেনাবাহিনী সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি সেনাচৌকিগুলোতে হামলা চালায়। পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীও। টানা সংঘাত চলতে থাকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত।

পরে ১৫ অক্টোবর, দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। সংঘাতের সময় নিহত হন প্রায় ২০০ আফগান সেনা ও ২৩ পাকিস্তানি সেনা।

১৮ অক্টোবর দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সরকারি প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু হয়। পরবর্তীতে আলোচনা স্থানান্তরিত হয় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে, যেখানে ২৫ অক্টোবর থেকে নতুন করে বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে তুরস্ক ও কাতার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। ২৮ অক্টোবর আলোচনার অচলাবস্থা দেখা দিলেও মধ্যস্থতাকারীদের উদ্যোগে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়। পুনরায় আলোচনা শুরু হয় ২৯ অক্টোবর, এবং অবশেষে ৩০ অক্টোবর দুই দেশ যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে সম্মত হয়।

সূত্র: জিও নিউজ

জনপ্রিয়