পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধে দুই বাংলাদেশি নিহত
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)–এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দেশটির যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন।
নিহতদের একজন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রতন ঢালী (২৯) এবং অন্যজন ফয়সাল হোসেন (২২)। ফয়সালের বিস্তারিত ঠিকানা এখনো জানা যায়নি।
বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (সিটিটিসি) ইউনিট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সিটিটিসির বিশেষ পুলিশ সুপার রওশন সাদিয়া আফরোজ বলেন, “আমরা শতভাগ নিশ্চিত—রতন ঢালী পাকিস্তানে গিয়ে টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।”
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, রতন ও ফয়সাল ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে অবৈধভাবে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে টিটিপিতে যোগ দেন তারা।
রতন ঢালী ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল সেন্টারে কাজ করতেন। তাঁর বাবা আনোয়ার ঢালী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক, মা সেলিনা বেগম গৃহিণী। পরিবারের সঙ্গে রতনের শেষ যোগাযোগ হয় গত ১০ এপ্রিল ঈদের দিনে। সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতে আছেন এবং শিগগিরই দুবাই যাচ্ছেন। এরপর থেকেই তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী বলেন, “রাতন গ্রামের বাড়ি থেকে সব কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিল। বলেছিল, দুবাই যেতে লাগবে। এরপর আর যোগাযোগ করেনি। পরে জানতে পারলাম সে নাকি পাকিস্তানে গেছে।”
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরও জানান, চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে টিটিপির ৫৪ জন যোদ্ধা নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক আহমেদ জুবায়েরও ছিলেন। তদন্তে পরে রতন ঢালী ও ফয়সালের নাম উঠে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রতন ও ফয়সাল দুজনেই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
গোয়েন্দারা বলছেন, তারা শুধু টিটিপির সঙ্গে যুক্তই ছিলেন না, বরং বাংলাদেশের তরুণদের চরমপন্থী সংগঠনের প্রতি প্ররোচিত করার কাজেও যুক্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে। তরুণদের অনলাইন বা বিদেশি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারি ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি জোরদার করা হচ্ছে।



























