সোমবার ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬ ভাদ্র ১৪৩২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৩১ আগস্ট ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি
সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৭৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা নগরীতেই নিহত হয়েছেন ৪৭ জন।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১১ জন রুটি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় প্রাণ হারান। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা রবিবার (৩১ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

অবিরাম বোমাবর্ষণ ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ অভিযানের মুখে শত শত বাসিন্দা গাজা নগরী ছেড়ে পালাচ্ছেন। হাতে গোনা সামান্য মালপত্র নিয়ে ট্রাক, ভ্যান ও এমনকি গাধার গাড়িতেও তারা এলাকা ছাড়ছেন।

নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে দেইর আল-বালাহ এলাকায় বহু পরিবার খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী তাঁবু ফেলতে শুরু করেছে। এদের অনেককেই একাধিকবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতে হয়েছে।

৫০ বছর বয়সী মোহাম্মদ মারুফ বলেন, “আমরা রাস্তায় পড়ে আছি। কী বলব? কুকুরের মতো? না, কুকুরের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছি আমরা।”

তিনি জানান, তার ৯ সদস্যের পরিবার আগে উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন।

আরেক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ আবু ওয়ারদা জানান, তিনি জাবালিয়া ছেড়ে পশ্চিম গাজার দিকে যাচ্ছেন। কিন্তু কোথায় গিয়ে আশ্রয় পাবেন তা জানেন না। তার ভাষায়, “অবস্থা এত ভয়াবহ ছিল যে সেখান থেকে বেরোতে বাধ্য হয়েছি। এখানে তাঁবু খাটানোর জায়গা পেলেই ভাগ্য ভালো হবে। কোথাও নিরাপদ নয়, ইসরায়েলিরা সর্বত্র আক্রমণ চালাচ্ছে।”

আগস্টের শুরু থেকে টানা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি সেনারা। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, শহর দখল ও প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করাই এই অভিযানের লক্ষ্য।

গত শুক্রবার ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা গাজা নগরী দখলের “প্রাথমিক ধাপ” শুরু করেছে এবং পুরো শহরকে “যুদ্ধক্ষেত্র” ঘোষণা করেছে।

শনিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই দিন গাজায় ৭৭ জন নিহত হয়েছেন। শুধু গাজা নগরীতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন। আবাসিক ভবনে বোমাবর্ষণে সাতজন নিহত হন। ধ্বংসস্তূপে স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্ধারকাজ চালাতে দেখা গেছে।

আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, “গাজা নগরীজুড়ে হামলা আরও বাড়ছে। ঘরবাড়ি, কমিউনিটি সেন্টার সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনধারার ভিত্তি ভেঙে পড়ছে। এ সব ঘটছে যখন মানুষ দুর্ভিক্ষ, অনাহার আর পানিশূন্যতার মধ্যে রয়েছে। পুরো পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয়ে গড়াচ্ছে।”