সিরিজের মঞ্চে চূড়ান্ত লড়াই আজ মিরপুরে
আজ মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজ এখন ১-১ সমতায়, তাই আজকের ম্যাচই হয়ে উঠেছে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল। মিরপুরের ঘূর্ণি উইকেটে এই ম্যাচটিতে ব্যাটারদের জন্য অপেক্ষা করছে আরেক কঠিন পরীক্ষা— স্পিনের জালে টিকে থাকা।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুই দলই স্পিনের ওপর নির্ভর করে এক অনন্য ইতিহাস গড়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের পুরো ৫০ ওভারই বল করায় স্পিনারদের দিয়ে— যা ওয়ানডে ক্রিকেটে এই প্রথম। বাংলাদেশের ইনিংসে তারা ২১৩ রানে বেঁধে রাখে এবং রোমাঞ্চকর সুপার ওভারে ১ রানে জয়ের স্বাদ পায়। পুরো ম্যাচে ৯২ ওভার স্পিনে বল ঘুরেছে— যা স্পষ্ট করে দিয়েছে, উইকেটটি ধীর, টার্নধরা এবং ব্যাটারদের জন্য মোটেই সহজ নয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল সেই পরিস্থিতিকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে পেসার জাস্টিন গ্রিভস এক ওভারও পাননি। বরং পার্টটাইম অফস্পিনার আলিক আথানাজে ১০ ওভারে মাত্র ১৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে চমকে দেন। নিয়মিত স্পিনার আকিল হোসেইন, রস্টন চেজ ও খ্যারি পিয়েরে বোলিংয়েও ছিলেন ধারাবাহিক।
বাংলাদেশও স্পিন আক্রমণে ভরসা রাখে— ৫০ ওভারের মধ্যে ৪২ ওভারই করান স্পিনারদের দিয়ে। নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানভির ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও সাইফ হাসান সবাই ছিলেন আক্রমণে।
তবে দুই দলেরই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা ব্যাটিং নিয়ে। ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ দ্বিতীয় ম্যাচে অর্ধশতক পেলেও বাকিদের ইনিংস ছোট ছিল। বাংলাদেশ দলের অবস্থাও অনুরূপ— সৌম্য সরকার সর্বোচ্চ ৪৬ রান করলেও ৬২ শতাংশ ডট বল তাদের স্ট্রাইক রেটকে নিচে নামিয়েছে। নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাইফ হাসান এখনো বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, আর শেষদিকে রিশাদ হোসেনের কয়েকটি ছক্কাই দলের রান টেনে তোলে।
আজকের নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ দলে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। তানজিদ হাসান, জাকের আলী অনিক ও শামীম হোসেনের সুযোগ মিলতে পারে বলে জানা গেছে।
শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট এখন যেন এক ধাঁধা— কখনো বাড়তি টার্ন, কখনো অনিয়মিত বাউন্স, আবার কখনো ধীর গতি। ব্যাটারদের জন্য এটি এক ধৈর্যের পরীক্ষা, আর বোলারদের জন্য মায়াজালের মঞ্চ। আজ যে দল এই ঘূর্ণি পিচে মানিয়ে নিতে পারবে, সিরিজ জয়ের হাসিটাও ফুটবে তাদের মুখেই।



























