মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা, আহত অন্তত ৫০

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ২০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সবশেষ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের বরাতে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী ২ নম্বর গেটের মাছ বাজার সংলগ্ন শাহাবুদ্দিনের বাসায় ভাড়া থাকেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই ছাত্রী বাসায় ঢুকতে গেলে দারোয়ানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে দারোয়ান তাকে মারধর করেন। এ খবর পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাঁধে। স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। অন্যদিকে চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরাও সংঘর্ষে জড়ান।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন— আরবি বিভাগের ফুয়াদ হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শাওন, ইতিহাস বিভাগের তাহসান হাবিব, লোকপ্রশাসন বিভাগের আশ্রাফ রাতুল, গণিত বিভাগের লাবিব, ইংরেজি বিভাগের হাসান জুবায়ের হিমেল, অর্থনীতি বিভাগের নাহিন মুস্তফা, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আল-মাসনুন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আশিক মিয়া, দর্শন বিভাগের মাহিন ও তামিম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের হুমায়ুন কবির, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের রিদুয়ান, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের রিফাত ও রিপন, বাংলা বিভাগের সাইদুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. ইয়েন।
চবি মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান জানান, “বহু শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। গুরুতর অবস্থায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “আমরা রাত ১২টার দিকেই নিরাপত্তা টিম পাঠিয়েছিলাম। তবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকায় তাদের একত্রিত করে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ে। শুরুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও যথেষ্ট উপস্থিতি ছিল না। পরে সেনা মোতায়েনের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।”