সৌর প্রকল্পে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম: টিআইবি
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ৬টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রায় ২,৯২৬ কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয় ও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
ধানমন্ডিতে বুধবার টিআইবির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার গবেষকরা ‘বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ৬টি সৌর প্রকল্পে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অনুমোদিত ৮ কোটি টাকার বদলে গড়ে ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ২,৯২৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
গবেষকরা জানান, সরকারি জমিতে স্থাপিত প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে প্রতি মেগাওয়াট ইউনিট খরচ ১৪ কোটি ৮ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে, যা অন্যান্য প্রকল্পের তুলনায় অনেক বেশি। শুধু ভূমি ক্রয় ও ক্ষতিপূরণ প্রদানে ৫টি প্রকল্পে ২৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দেশে বিদ্যুৎখাতে বিদেশি বিনিয়োগের মাত্র ৩.৩ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রক্রিয়াগত অস্পষ্টতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগের ‘লেটার অব ইন্টেন্ট’ বাতিল হয়েছে। নতুন দরপত্র আহ্বান করা হলেও ১৩টি প্যাকেজে কোনো দরপত্র পাওয়া যায়নি।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বিদ্যুৎখাতে নীতি সংক্রান্ত অসঙ্গতি ও দুর্নীতি স্পষ্ট। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা প্রায় ৯৫ শতাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরতা মাত্র ৪ শতাংশের কম।”
তিনি আরও জানান, ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সর্বোচ্চ ৯৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর ২০৩০–২০৪১ পর্যন্ত প্রতিবছর ১.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। কিন্তু সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থায়ন পরিকল্পনা নেই।
টিআইবি সতর্ক করে বলেছে, এই অবস্থা বজায় থাকলে ২০৫০ সালের নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন হয়ে যাবে।



























