চট্টগ্রামে পাঁচ দিনে চার হিন্দুবাড়িতে বাহির থেকে দরজা আটকে আগুন
চট্টগ্রামে পাঁচ দিনের ব্যবধানে হিন্দু সম্প্রদায়ের চারটি পরিবারের ঘরে বাইরে থেকে দরজা আটকে আগুন দেওয়ার একের পর এক উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোরে রাউজান পৌরসভার পশ্চিম সুলতানপুর গ্রামে দুই পরিবারের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আকস্মিক আগুনের লেলিহান শিখায় ঘুম ভেঙে যায় ঘরে থাকা আটজনের। বাইরে দরজা আটকে থাকায় তারা টিন ও বাঁশের বেড়া কেটে কোনোমতে প্রাণ নিয়ে বের হতে সক্ষম হন। তবে রক্ষা হয়নি ঘরের আসবাবপত্র, নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রায় সর্বস্ব।
এর আগের কয়েক দিনেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে রাউজানের বিভিন্ন এলাকায়। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে পৌরসভার ঢেউয়াপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি পরিবারের ঘরে বাইরে থেকে দরজা তালাবদ্ধ করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সদর ইউনিয়নের কেউটিয়া বড়ুয়াপাড়া গ্রামে সাধন বড়ুয়ার ঘরেও একই কায়দায় আগুন দেওয়া হয়। এসব ঘটনার পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
সুলতানপুরের ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, ভোর পৌনে চারটার দিকে সুখ শীল ও অনিল শীলের ঘরে আগুন দেওয়া হয়। সুখ শীল দুবাই প্রবাসী, আর অনিল শীল পেশায় দিনমজুর। বাঁচতে মরিয়া দুই পরিবার ঘরের বেড়া কেটে বের হন। আগুনে পাসপোর্ট, মূল্যবান আসবাব, নগদ টাকা—সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানান তারা।
খবর পেয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রাহাতুল ইসলাম ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের আশ্বাস দেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি জানান। রাউজান থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে দরজায় হুক লাগিয়ে আগুন দিয়েছে। অভিযোগের পর চলমান তদন্তে এখন পর্যন্ত সাত জনকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়িতেও একই কায়দায় আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুড়ে মারা যায় সাত বছরের এক শিশু এবং গুরুতর দগ্ধ হন আরও তিনজন। গৃহকর্তার দাবি—বাইরে থেকে দরজা আটকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছিল।
সূত্র: একাত্তর টেলিভিশন



























