ঢাকা-২০ আসনে এনসিপির প্রার্থী মনোনয়ন ঘিরে বিতর্ক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রকৌশলী নাবিলা তাসনীম-কে প্রাথমিক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন। তবে ঘোষণার পরপরই স্থানীয় পর্যায়ে শুরু হয় বিতর্ক। এনসিপির ধামরাই উপজেলার একাধিক নেতাকর্মী জানান, তারা নাবিলা তাসনীমকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না এবং তার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যক্রমের কোনো দৃশ্যমান সম্পৃক্ততা নেই।
ধামরাইয়ের নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে প্রায় এক বছর ধরে তারা এলাকায় দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। ২০২৫ সালের ২২ জুন ধামরাই উপজেলা কমিটি গঠনের পর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে।
মনোনয়ন আহ্বানের সময় ধামরাইয়ের পাঁচজন নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তাঁদের মধ্য থেকেই নাবিলা তাসনীমকে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, তিনি ধামরাইয়ের চৌহাট ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম এলাকার বাসিন্দা হলেও বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করেন।
ঘোষণার পরপরই ফেসবুকে একাধিক নেতাকর্মী প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট দেন। তাঁদের অভিযোগ—প্রার্থীটির সঙ্গে স্থানীয় সংগঠনের কোনো পরিচিতি বা যোগাযোগ নেই।
ইসরাফিল হোসেন রাজন বলেন, *“আমি তাকে চিনি না। এলাকায় খুব কম আসেন। মনোনয়ন পাওয়ার পরও কোনো যোগাযোগ হয়নি।”
উজ্জ্বল হোসেন জানান, “দলের সঙ্গে তার কার্যকর সম্পর্ক নেই। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে লিখিত অভিযোগ করেছি।”
উপজেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ইসরাফিল ইসলাম খোকন বলেন, “ঢাকা-২০-এর প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে ঠিকই, তবে কেন্দ্রীয় কমিটি যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। দুই-তিন দিনের মধ্যে আলোচনা হবে।”
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুল ইসলাম মুকুল বলেন, “গতানুগতিক ধারার বাইরে আসা প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রয়োজনে পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ আছে।”
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জহির বলেন, “ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। শুনেছি তিনি ধামরাইয়ের মেয়ে, তবে দলীয় কার্যক্রমে তাকে দেখিনি।”
নাবিলা তাসনীম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি দেশের মানুষ, বিশেষ করে ধামরাইবাসীর পাশে দাঁড়াতে ও ধামরাইয়ের উন্নয়ন করতে চাই। ইঞ্জিনিয়ার ও এমবিএ পড়েছি- প্রায় ১০ বছর মার্চেন্ডাইজ কোম্পানিতে কাজ করেছি, সেই অভিজ্ঞতা জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাবো। আমি জনগণের মতামতকে স্বাগত জানাই এবং নির্বাচনের সময় যেসব কথা দেওয়া হবে, সেগুলো বাস্তবে রূপান্তরিত করব। আমি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী।’
এনসিপি যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, ‘আমরা বিষয়টি ওয়াকিবহাল রয়েছি। মনোনয়ন দেওয়ার সময় আমরা কোনও কিছুই চূড়ান্ত করে দেইনি। এটা প্রাথমিক মনোনয়ন। এটার যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ রয়েছে।’



























