আজ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ সোমবার। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রমনা রেস্তোরাঁয় আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। দিনটি উপলক্ষে বিএনপি আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমান। এরপর গৃহবধূ থেকে রাজনীতির অঙ্গনে আসেন তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। ১৯৮৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং দ্রুত দলের শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসেন। ১৯৮৪ সালের মে মাসে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া দুই বছরের বেশি সময় কারাভোগ করেন। পরে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেলেও অসুস্থতার কারণে সক্রিয় রাজনীতির বাইরে রয়েছেন তিনি। বর্তমানে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিএনপি তিন দফায় ক্ষমতায় এসেছে। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দলটি সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ক্ষমতায় এলেও মাত্র দেড় মাস টিকেছিল সেই সরকার। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে জিতে চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে বিএনপি। এরপর থেকে টানা সতেরো বছরেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে দলটি।
দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বাণীতে বলেন, 'জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করাসহ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য। দেশে এখনো প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আইনের শাসন, স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এ জন্য জনগণের নির্বাচিত জবাবদিহিমূলক সরকার অতীব জরুরি।
তারেক রহমান বলেন, 'জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। দিনটি বাংলাদেশি মানুষদের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। দলটি বাংলাদেশি ভূখণ্ডের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেয়ার নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।'
একইসঙ্গে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বাণীতে বলেন, “অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করা গেলে নাগরিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। দুঃশাসনের কাঠামো ভেঙে একটি সহিষ্ণু ও মানবিক সমাজ গঠনই জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রধান লক্ষ্য।”
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে গঠিত হয়েছে ১৬ সদস্যের জাতীয় উদ্যাপন কমিটি। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আহ্বায়ক এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দিনটি উপলক্ষে সকালে দলীয় কার্যালয়গুলোতে পতাকা উত্তোলন ও শেরেবাংলা নগরে প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। দেশব্যাপী আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালি বের হবে এবং ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা-পৌরসভা পর্যায়ে কর্মসূচি পালিত হবে।