ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রেকর্ড ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

প্রথম ওয়ানডে জিতে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে নাটকীয়ভাবে সুপার ওভারে হেরে সিরিজে সমতা ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে শেষ ম্যাচে কোনো সুযোগই দেয়নি মেহেদি হাসান মিরাজের দল। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ১৭৯ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিকরা।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৬ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ৩০ ওভার এক বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুটি চার মেরে শুভ সূচনা করেন সাইফ হাসান। এরপর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে যোগ দেন সৌম্য সরকার। উদ্বোধনী জুটিতে ৪৬ বলেই আসে দলের পঞ্চাশ। স্পিনে সুবিধা করতে না পেরে দশম ওভারে পেসার জাস্টিন গ্রিভসকে আক্রমণে আনেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ, কিন্তু তিনিও সফল হতে পারেননি।
ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সৌম্য। এটি ওয়ানডেতে তার ১৪তম অর্ধশতক এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ষষ্ঠ। অপর ওপেনার সাইফও ৪৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন।
দুজনই সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছিলেন দুর্দান্ত ছন্দে। কিন্তু ২৬তম ওভারে রোস্টন চেজের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইফ—৭২ বলে ৬ ছক্কায় ৮০ রান করে। ১৭৬ রানে ভাঙে জুটি। কিছুক্ষণ পরই সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা সৌম্যও ক্যাচ তুলে দেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৬ বলে ৯১ রান।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রানের গতি কমে যায়। তাওহিদ হৃদয় (৪৪ বলে ২৮) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৫৫ বলে ৪৪) কিছুটা সময় ব্যাট করলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। প্রমোশন পেয়ে ছয়ে নেমে ব্যর্থ হন রিশাদ হোসেন (৬ বলে ৩)। ব্যর্থতার তালিকায় যুক্ত হন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও নাসুম আহমেদও।
শেষদিকে দলের রান তিনশোর কাছাকাছি নিয়ে যান নুরুল হাসান ও মিরাজ। নুরুল অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১৬ রানে, আর মিরাজ খেলেন ১৭ বলে ১৭ রানের কার্যকর ইনিংস।
৩০০ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই প্রান্তেই স্পিন আক্রমণ শুরু করেন মিরাজ। পঞ্চম ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আলিক আথানজেকে ফিরিয়ে প্রথম সাফল্য এনে দেন নাসুম আহমেদ।
পরের ওভারেই আবার আঘাত হানেন এই বাঁহাতি স্পিনার—আকিম অগাস্টেকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন। এরপর ব্রেন্ডন কিং (১৭ বলে ১৮)কেও বোল্ড করে উইকেটের শিকার হন তিনি।
গত ম্যাচের নায়ক শাই হোপকে এবার ১৬ বলে মাত্র ৪ রানে ফেরান তানভির ইসলাম। রাদারফোর্ডও (১২) রিশাদের বলে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপ।
শেষদিকে জাস্টিন গ্রেভস ও আকিল হোসেন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও তা কেবল ব্যবধান কমানোর প্রয়াসেই সীমাবদ্ধ থাকে। দশ নম্বরে নেমে আকিলের ব্যাট থেকে আসে দলের সর্বোচ্চ ২৭ রান।
বাংলাদেশের হয়ে নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন নেন ৩টি করে উইকেট। দু’টি করে উইকেট শিকার করেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও তানভির ইসলাম।
দারুণ এই জয়ে সিরিজ নিজের করে নিল টাইগাররা, আর মিরপুরে দেখা গেল বাংলাদেশি স্পিনারদের রাজত্ব।