কুষ্টিয়ায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে শ্রমিকদের কর্মবিরতি

দেশের বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশের শ্রমিকরা ১২ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৬টা থেকে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে লিফ ফ্যাক্টরির গেটের সামনে অবস্থান করছেন তারা।
শ্রমিক সাব্বির হাসান শাওন বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার। মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে মেসার্স মতিয়ার রহমান নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বিএটিতে শ্রমিক হিসেবে প্রায় এক হাজার ২০০ জন কাজ করি। ১২ দফা দাবি আদায়ে রোববার সকাল থেকে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। অনেক আগে থেকেই আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি মানা হয় না। দাবি মানা না পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
কর্মবিরতি পালন করা রাতুল ও চয়ন বলেন, আমরা প্রতি মাসে সাড়ে ১০ হাজার টাকা বেতন পাই। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ডিউটি করি। এই বেতনে আমাদের সংসার চলে না। আমরা অনেক কষ্ট করি। আমাদের বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের ১২ দফা দাবি মানতে হবে। আমাদের দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত আমাদের এই কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে। আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিলে আমরা কাজে ফিরব।
শ্রমিকদের ১২ দফা দাবিগুলো হচ্ছে- সর্বনিম্ন বেতন ১৮ হাজার টাকা দিতে হবে, প্রতি বছর বেতন ২০% হারে বাড়াতে হবে, বেতনের সমপরিমান বোনাস দিতে হবে, সাপ্তাহিক ছুটিসহ অনান্য ছুটির দিনে ডিউটি করলে বেতন বাদে ১৬ ঘণ্টা ওভার টাইম দিতে হবে, ফুল সেট মানসম্মত ২ সেট পোশাক দিতে হবে, নাইট অ্যালাউন্স দিতে হবে, কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিকের দুর্ঘটনা ঘটলে সম্পূর্ণ চিকিৎসা খরচসহ চিকিৎসা চলাকালীন সময়ের বেতন দিতে হবে, সকল শিফটে মানসম্মত নাশতা দিতে হবে, পরবর্তী সিজনে চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে, সিজন শেষে ৪ মাসের বেতনের সমপরিমাণ খোরাকী দিতে হবে, গত ২৪/০৪/২০২৫ তারিখ হতে বেতন প্রদান করতে হবে এবং কোম্পানির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে মেসার্স মতিয়ার রহমান নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান আকতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কুষ্টিয়া অফিসের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) ফারজুন ইসলাম বলেন, ঈদের পর আজকে অফিস চালু হয়েছে। শ্রমিকদের কর্মবিরতির বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের লিফ ফ্যাক্টরির প্ল্যান্ট ম্যানেজার মুকিত চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এছাড়া ফ্যাক্টরিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশাররফ হোসেন বলেন, শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে। কর্মবিরতি পালন করছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে।