বুধবার ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

ডিবি থেকে ছাড়া পেয়ে যা বললেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল

ডিবি থেকে ছাড়া পেয়ে যা বললেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) হেফাজত থেকে বাসায় ফিরে একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন প্রধান মিজানুর রহমান সোহেল।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) গভীর রাতে বাড্ডার বাসা থেকে তাকে তুলে নেওয়ার প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর বুধবার সকালে তিনি বাসায় ফেরেন।

মিজানুর লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। বিনা অপরাধে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ডিবি হেফাজতে থাকার পর তারা আমাকে স্বসম্মানে মাত্র বাসায় পৌঁছে দিয়েছে। গত রাত ১২টার দিকে ডিবি প্রধান আমার সঙ্গে কথা বলবেন, এই অজুহাতে ৫/৬ জন ডিবি সদস্য জোর করে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। ডিবিতে নিয়ে আসামীর খাতায় আমার নাম লেখা হয়। জুতা-বেল্ট খুলে রেখে গারদে আসামীদের সাথে আমাকে রাখা হয়।’

তিনি পোস্টে আরও জানান, কেন তাকে আটক করা হয়েছে—সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাননি। তার ভাষায়, ‘কিন্তু কেন আমাকে আটক করা হলো? তা আমি যেমন জানতাম না, তেমনি যারা আমাকে তুলে এনেছিলেন বা ডিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও কিছু বলতে পারেননি। দীর্ঘ সময় পর বুঝতে পারলাম, সরকারের একজন উপদেষ্টার ইশারায় মাত্র ৯ জন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্যই আমাকে আটক করা হয়েছিল।’

মিজানুর বলেন, তার সঙ্গে সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সাঈদ পিয়াসকেও তুলে নেওয়া হয় এবং তিনি এখনও ডিবি কার্যালয়ে আছেন। তিনি জানান, বুধবার ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) নিয়ে ডিআরইউতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)-এর যে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল, সেখানে তিনি মিডিয়া পরামর্শক ছিলেন। সেই সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করাই ছিল মূল লক্ষ্য।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘কিন্তু তাদের জন্য আফসোস, যে উদ্দেশ্যে তারা প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতে চাইলো সেটা দেশের সবাই জেনে গেলো।’

এনইআইআরকে তিনি দেশের মুক্ত বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বলেন, মাত্র ৯ জন ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে সারাদেশের প্রায় ২৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে পথে বসানোর চক্রান্ত চলছে। তার দাবি, এই ৯ জনের একজন সরকারের ওই উপদেষ্টার স্কুল-বন্ধু।

পোস্টে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘একটা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে সরকার কেন ভয় পায়? শুধুমাত্র প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতেই কি আমাকে গভীর রাতে জোর করে তুলে নিতে হলো? যারা মুখে ‘বাকস্বাধীনতা’র বুলি আওড়ান, তারাই কি আমাকে বাকরুদ্ধ করতে এই আয়োজন করলেন? মগের মুল্লুকে এই কি তবে বাকস্বাধীনতার বাস্তব চিত্র?’

মিজানুর জানান, তাকে আটক করার ঘটনা জানাজানি হতেই বহু মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং বিভিন্নভাবে সমর্থন জানান। তিনি লেখেন, ‘তাদের এই সমর্থন ও আওয়াজের কারণেই আমি দ্রুত মুক্তি পেয়েছি বলে বিশ্বাস করি। যারা আমার পাশে ছিলেন তাদের সবার প্রতি আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।’

জনপ্রিয়